
শফিকুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম:
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদে পানি কমার সাথেসাথে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। গত এক মাসে ১৫২ পরিবারের বসতবাড়িসহ ফসলি জমি নদে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে কয়েকশ পরিবার। হুমকিতে রয়েছে স্থানীয় বাজার, আবাদি জমি, মসজিদ, শিক্ষা গ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। সম্প্রতি সরেজমিন দেখা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদে পানি কমার সাথে সাথে রৌমারী উপজেলার চরশৌলমারী ইউনিয়নের সুখেরবাতি, সোনাপুর, ঘুঘুমারী ও নামাজের চর এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক মাসে ১৫২ পরিবারের বসতবাড়ি, ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদে বিলীন হয়েছে। বসতভিটা বিলীন হওয়ায় অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়েছে অনেক পরিবার। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, এসব এলাকার ভাঙন ঠেকাতে এখন পর্যন্ত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। যদিও জিও ব্যাগ ফেলা হয়, তাও নামমাত্র জিও ব্যাগ ফেলে দায় সারে কর্তৃপক্ষ। ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা মজিদ মিয়া, মোত্তালেব হোসেন, আমিনা বেগম, বাদশা মিয়াসহ অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নির্বাচনের আগে জন প্রতিনিধিদের আশ^াস, সরকারী কর্মকর্তারা পরিদর্শন করে এক পাহাড় সমান আশ^াস নিয়ে চলে যান, পরে কাজের কাজ কিছুই হয় না। আমাদের ভাগ্যোটাই খারাপ. এদিকে বছরের পর বছর নদী ভাঙনে নিঃস্ব হচ্ছে শত শত পরিবার। অথচ কার্যকরি কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না সরকার। নদী ভাঙনের শিকার শিল্পী বেগম বলেন, এক সপ্তাহে আগে তাঁর বসতভিটা নদে বিলীন হয়ে গেছে। নিজের কোনো জমি না থাকায় অন্যের জমিতে ঠাঁই নিয়ে বাস করছেন। সব হারিয়ে এখন নিঃস্ব তিনি। নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত আমিনুল ইসলাম বলেন, তিন দিন আগে আমাগরে বসতভিটা নদে বিলীন হয়ে গেছে। তাঁর যেটুকু আবাদি জমি ছিল, তাও নদে বিলীন হয়ে গেছে। ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে গেছি। চরশৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কেএইচএম সাইদুর রহমান দুলাল বলেন, প্রতিবছর ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বাড়ার এবং কমার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় তীব্র ভাঙন। এতে বসতবাড়ি হারিয়ে অনেকে নিঃস্ব হয়েছে। আমাদের চোখের সামনেই সবকিছু নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার থাকে না। সরকারের কাছে আমার দাবি জরুরী ভিত্তিতে ব্রহ্মপুত্র নদের বাম তীর সংরক্ষনের জন্য দ্রুত কার্যকরি ব্যবস্থা নেয়। ভাঙন বিষয়টি নিয়ে কথা হয় কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসানের সঙ্গে তিনি বলেন, ঝুকি পূর্ণ এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অর্থ সংকটের কারণে আমরা বড়কোন কাজ শুরু করতে পারছি না।